কলিযুগে এমন প্রেম? রতন টাটার প্রেমকাহিনী যেন রূপকথার গল্প!

            


                  কবি বলেছেন- চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর। প্রেম প্রাপ্তি না হোক, প্রেমকে পাথেয় করে হাজার বছর না হোক, যৌবন ও বার্ধক্য যে কাটিয়ে দেওয়া যায় তা আমরা ভারতরত্নের দাবিদার রতন টাটা মহাশয় এর কাছ থেকে শিখি। কেমনইবা ছিল টাটার প্রেম কাহিনী ? 
        
                আমাদের জীবনকে যেমন বিজ্ঞান ছাড়া ভাবাই যায় না। ঠিক একই রকমভাবে টাটা কোম্পানির প্রডাক্ট ছাড়া আমাদের জীবন চলে না।

             সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমরা চা পান করতে পছন্দ করি। সুগন্ধি উন্নত মানের চা প্রস্তুতকারক হিসেবে টাটা কোম্পানির নাম কিন্তু শোনা যায়। তারপর খাবার লবণ, নানারকম রাসায়নিক, যানবাহন থেকে শুরু করে বিল্ডিং নির্মাণের টিএমটি পর্যন্ত টাটা কোম্পানির দ্বারা প্রস্তুত হয়। বিশ্ব বিখ্যাত এই কোম্পানির বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন রতন টাটা। তিনি একদিকে যেমন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন, অন্যদিকে তার ঝুলিতে রয়েছে পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ এর মতো অসামান্য সব খেতাব। তার ব্যবসায়িক ডিকশনারিতে সাধারণত ইম্পাসেবিল বা ব্যর্থ শব্দটি লক্ষ করা যায় না। তবে ব্যক্তিগত জীবনে 83 বছরের এই চিরকুমার প্রেমে ব্যর্থ বলেই শোনা যায়। 

              1937 সালে গুজরাটের সুরাটে রতন নাভাল টাটা জন্মগ্রহণ করেন মাত্র। মাত্র 10 বছর বয়সে তার বাবা ও মায়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে ।তাই ঠাকুমার কাছেই তিনি ও তার ভাইরা বড় হয়ে ওঠেন। সমস্ত শিক্ষা, নীতিবোধ তিনি ঠাকুরমার কাছ থেকেই অর্জন করেছেন ।বাবা চেয়ে ছলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোন নামিদামি কলেজ থেকে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াতে, কিন্তু ঠাকুমার সাপোর্টে নিজের পছন্দের বিষয় আর্কিটেকচার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলেজে পড়তে যান ও স্নাতক স্তর অতিক্রম করেন ।

             যৌবনে রতন টাটা ছিলেন অতীব হ্যান্ডসাম এক বলিষ্ঠ পুরুষ ।স্নাতক পাস এর পর তিনি লস অ্যাঞ্জেলসে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়ে প্রেমে পড়েন এক মার্কিন সুন্দরীর । অন্য সকল প্রেমিক-প্রেমিকাদের মতো ওই সময়টা রতন টাটার কাছে ছিল এক সুবর্ণ সময়। এভাবেই তাদের প্রেমের গাড়ি চলছিল অজানা সব রূপকথার জায়গায়। এভাবে কয়েক বছর প্রেম বিনিময়ের পর দুই পরিবারের পক্ষ থেকে আছে বিয়ের প্রস্তাব। এ প্রস্তাবে দুই পরিবারই রাজি হয়ে যায়।

              এই সময় হঠাৎ করেই ঠাকুমা অসুস্থ হওয়ার কারণে রতন টাটা দেশে ফেরত আসেন। আগের কথা মতো তাদের বিয়ে ভারতে সম্পন্ন হবে বলেই সবকিছু ঠিকঠাক হল। আর এই সময়ে শুরু হয়ে গেল হাজার 1962 সালের ভারত-চীন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের কারণে রতন টাটার প্রেমিকার পরিবার তাদের মেয়েকে আর কোনভাবেই ভারতে পাঠাতে চাইলেন না। চেষ্টা করেও কোনোভাবেই তাদের এই সম্পর্ক বিয়ের পিঁড়িতে স্থান পেল না। এর ফলে অচিরেই ভেঙে গেল তাদের সুমধুর প্রেমের সম্পর্ক। এই সম্পর্ক থেকে রতন টাটা মহাশয় তীব্র মানসিক আঘাত পেলেন। তারপর আর কখনোই তিনি বিয়ে করেননি। সারা জীবন অবিবাহিত থেকে গেছেন। আজও তিনি যেন চির যৌবন এর প্রতীক চিরকুমার।

           তবে বিভিন্ন মহলে শোনা যায় তিনি নাকি একজন ব্যর্থ প্রেমিক। সত্যিই কি তিনি ব্যর্থ প্রেমিক? নাকি এটাকে প্রেমের প্রতি নিঃস্বার্থ প্রতিদান বলা যায়। 

আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না🙏🙏🙏🙏।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.