নারকেল নিয়ে কিছু কথা -
নারিকেল বা নারকেল আমাদের সবার অতি পরিচিত একটি ফল। সাধারণত এশিয়া মহাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে নারকেল গাছের আধিক্য লক্ষ করা যায়। সংস্কৃতে নারিকেল কে শ্রীফল বলা হয়। উষ্ণ ক্রান্তীয় বালিময় এলাকা নারিকেল গাছের জন্য উপযুক্ত। যেসব অঞ্চলে গ্রীষ্মের আধিক্য লক্ষ করা যায়, সেখানে নারিকেলের ফলন ভালো হয়। পৃথিবীর প্রায় 75 শতাংশ নারিকেল ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনস এই তিনটি দেশে উৎপাদিত হয়।
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে শুধু যে আমরা নারকেল কে ফল হিসাবে ব্যবহার করি এমনটা নয়।নারকেল কে ফল হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি নারকেল গাছের বিভিন্ন অংশকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ঔষধ প্রস্তুত, কসমেটিক বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল এবং অন্যান্য কাজে নারকেল গাছের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তাই নারকেল গাছ কে জীবনের গাছ বলে অনেক সময় ডাকা হয়।
নারকেল দিবস এর ইতিহাস -
নারকেল ও নারকেল গাছের এমন নানান গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে নারকেলের গুরুত্বকে আরো বেশি করে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য 2009 সালে সেপ্টেম্বরের 2 তারিখে প্রথম বিশ্ব নারকেল দিবস পালিত হয়। এশিয়া মহাদেশে যে সকল অঞ্চলে বেশি নারকেল উৎপাদিত হয়, সেই সকল দেশ এই সেলিব্রেশনে অংশগ্রহণ করে। তখন থেকে প্রতিবছর 2 সেপ্টেম্বর নারকেল দিবস পালন করা হয়। নারিকেলের গুরুত্ব ও নারকেল গাছ রক্ষণাবেক্ষণ ও রোপনের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রতিবছর এই দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন রকম সেমিনার ও সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান এইদিন আয়োজিত হয়।
নারকেলের (ডাবের) উপকারিতা -
অনেক সময় ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার বাবু নিয়মিত ডাব-এর জল পান করার পরামর্শ দেন। কিন্তু কেন দেন সেই বিষয়টা হয়তো আমাদের সকলের জানা নেই। তাই ডাবের জলের উপকারিতা গুলি নিম্নরূপ আলোচনা করা হলো। আমাদের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ডাবের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
1. ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য আমরা বিভিন্ন রকম কৃত্রিম পদ্ধতি অবলম্বন করি। নানান রকম ক্রিম এর ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু সমস্যা থেকে মুক্তি পাই না। জানলে অবাক হবেন ডাবের জলে থাকে সাইটোকিন, যা অ্যান্টি এজিং এলিমেন্ট হিসাবে কাজ করে। এছাড়া ডাবের জল আমাদের ত্বককে হাইড্রেট রাখে। এর ফলে ত্বক অনেকটা বেশি উজ্জ্বল অনুভূত হয়। ডাবের জল নিয়মিত পান করলে আমাদের ত্বকের বলিরেখার আধিক্য কমে ও আমাদের অনেক সতেজ দেখায়।
2. যৌবনে অনেকের ব্রন এর আধিক্য লক্ষ করা যায়। আপনি যদি নিয়মিত ডাবের জল পান করেন তাহলে আপনি এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
3. যাদের উপযুক্ত বয়স হওয়ার আগেই চুল ঝরার সমস্যা থাকে, সে সকল ব্যক্তিরা যদি নিয়মিত ডাবের জল পান করেন তাহলে চুলের কোষের বিকাশ খুব সুন্দর ভাবে পরিচালিত হয়। চুল মজবুত হয়। এছাড়া মাথায় রক্ত পরিবহন ঠিকঠাক হয়। এর ফলে অকালে চুল পড়ার সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।
4. যাদের ত্বক একটু খসখসে ধরনের হয়, আপনারা নিয়মিত ডাবের জল পান করুন ও ত্বক হাইড্রেট রাখুন। এতে ত্বক অনেকটাই সজীব দেখাবে।
5. বর্তমান দিনে অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা অতি পরিচিত এক সমস্যা। যে সকল ব্যক্তির শরীরে গ্যাসের সমস্যা আছে, আপনারা নিয়মিত ডাবের জল পান করুন ও শরীরকে গ্যাস ও অ্যাসিডিটি মুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
6. ডাবের জলে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে। আপনি যদি নিয়মিত ডাবের জল পান করেন তাহলে হাড়ের ঘনত্ব যেমন বৃদ্ধি হয় হাড় মজবুতও হয়। এর ফলে আপনি হাড়ের নানা রকম রোগের সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন।
7. এছাড়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ও রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা কমাতে ডাবের জল এক অনস্বিকার্য ভূমিকা পালন করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ডাবের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়।
এছাড়া পুষ্টি ও নানা রকম শারীরিক সমস্যা সমাধানে ডাবের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়।
আরো পড়ুন 👉
খালি পেটে সকালে জল পান করেন? জানেন কি কতটা জল স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো?