হঠাৎ করে প্রেসার বেড়ে যাওয়ার জন্য নাকি রমেন দাদু মারা গেল ডাক্তার এসে এমনটাই বলল। এই ধরনের প্রেসার ওঠানামার ঘটনা আমাদের সমাজে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু মনে রাখবেন এভাবে প্রেসার হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া বা হঠাৎ করে কমে যাওয়া মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তির এভাবে প্রেসার কিন্তু ওঠানামা করে না। তাই জেনে রাখা ভালো স্বাভাবিকের থেকে বেশি অথবা কম প্রেসার মোটেও স্বাভাবিক বা সুস্থ থাকার লক্ষণ নয়। জেনে রাখা ভালো এটি মোটেও কোনো ভালো লক্ষণ নয়।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ: আমাদের সমাজের এক বিরাট সংখ্যক লোক উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। যদি কোন ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনে ভোগেন তাহলে যে সমস্ত উপসর্গগুলো লক্ষ করা যায় তাদের মধ্যে অন্যতম মাথা ব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা, বুক ধড়ফড় করা, অবসাদগ্রস্ততা যখন তখন নাক দিয়ে রক্ত পড়া, চোখে সবকিছু ঝাপসা দেখা, শ্বাসকষ্ট হওয়া, দুর্বল মাংসপেশি, বুকে ব্যথা, দিনের বেলায় যখন তখন ঘুম, হঠাৎ ঘেমে ওঠা, ইত্যাদি।
প্রেসার বেড়ে গেলে কি করা উচিত : আমাদের দেশের এক বিরাট সংখ্যক লোক উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। যদি কোন উচ্চরক্তচাপ যুক্ত রোগীর হঠাৎ করে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় তাহলে কিন্তু ভীষণ বিপদ হতে পারে। এক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঘুমের ওষুধ সেবন করাই ভালো। তাতেও যদি রক্তচাপ না কমে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শমতো চলাই শ্রেয়। আর যে সকল ব্যক্তির আগে থেকে উচ্চরক্ত চাপ নেই তাদের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন মানলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রখা যাবে বা কন্ট্রোলে রাখা সম্ভব।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিচের বিষয়গুলো খুব যত্ন সহকারে পালন করা উচিত:
1. যে সমস্ত খাদ্যে যথেষ্ট পরিমান পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে এই সকল খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য যথেষ্ট উপযোগী। যেমন দুধ জাতীয় খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। আপেল, কলা,
ইত্যাদিতে পটাশিয়াম ভালই থাকে। বিভিন্ন জাতীয় দানাশস্য বাদাম, ডাল, ছোলা, আলু, সবজি, তরমুজ, ইত্যাদিতে যথেষ্ট পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।
2. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বা কমানোর জন্য প্রতিদিন শরীরচর্চা করা খুবই প্রয়োজন। যাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ থাকে তারা সাধারণত উচ্চরক্তচাপের শিকার হয়। তাই শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ কমে দেওয়াই ভালো এতে যেমন উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তেমনি এট্রাক্টিভ লুক এর অধিকারী হওয়া যায়।
3. অনেকেই খাওয়ার সময় প্রত্যেকটা খাবারে যথেষ্ট পরিমাণের থেকে বেশি পরিমাণে লবণ খাওয়া পছন্দ করে। বেশি লবণ কিন্তু উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে।
4. রেড মিট না খেয়ে বেশি পরিমাণ মাছ খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
5. ধূমপান ও বিভিন্ন রকমের নেশা জাতীয় জিনিস উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে।
6. যতটা সম্ভব আনন্দে থাকা যায় সেদিকে আমাদের সবাইকে নজর দিতে হবে। সুখী জীবনযাপন উচ্চ রক্তচাপ থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে।
7.শরীর যাতে যথেষ্ট পরিমাণ বিশ্রাম পায় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। সমস্ত রকমের মানসিক অবসাদগ্রস্ততা এড়িয়ে যেতে হবে।
8. আর যে সকল ব্যক্তি উচ্চমাত্রায় ঔষধ গ্রহণ করেন তাদেরকে যতটা সম্ভব কম ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
লো প্রেসার
উচ্চ রক্তচাপ যেমন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক ঠিক একইভাবে কম প্রেসারও স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। সাধারণত অত্যাধিক পরিমাণে চিন্তা, স্নায়ু দুর্বলতা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, ইত্যাদি হাইপোটেনশন বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ হতে পারে।
নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ : যে সকল ব্যক্তি নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেসারে ভোগেন তাদের যখন তখন মাথা ঘোরে, শরীর অত্যাধিক দুর্বল মনে হয়, সব সময় বমি বমি ভাব হয়, চারিদিক কেমন ঝাপসা হয়ে থাকে, শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অনেক সময় কষ্ট হয়।
লো ব্লাড প্রেসার হলে কি করবেন: অনেকেই লো ব্লাড প্রেসার এর জন্য অনেক চিন্তা করেন, তবে মনে রাখা ভাল উচ্চ রক্তচাপের মতন লো ব্লাড প্রেসার কিন্তু এতটা ক্ষতিকারক নয়।
যদি আমরা বাড়িতে সঠিক কিছু পদক্ষেপ নি তাহলে লো ব্লাড প্রেসার থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
1. আগেই বলা হয়েছে লবণ উচ্চ রক্তচাপের কারণ। এতে সোডিয়াম আছে। তাই যাদের লো ব্লাড প্রেসার তারা যদি স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি লবণ গ্রহণ করে স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো হবে।
2. যতটা সম্ভব রেডমিট জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
3. বিভিন্ন ধরনের চকলেট জাতীয় খাদ্য, স্ট্রং কফি রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
4. আমরা অনেকেই জানিনা যদি আমরা নিয়মিত কিসমিস খাই অথবা কিসমিস ভেজানো জল পান করি তাহলে কিন্তু আমরা লো ব্লাড প্রেসার থেকে মুক্তি পেতে পারি।
5. বিভিন্ন রকমের বাদাম আমাদের প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে।
6. প্রাচীনকাল থেকেই মধুর ব্যবহার হয়ে আসছে। যদি আমরা নিয়মিত মধু পান করি তাহলে লো প্রেসার থেকে মুক্তি পেতে পারি।
উপরের নিয়মগুলো মেনে চলুন নিজে সুস্থ থাকুন ও সবাইকে সুস্থ রাখুন।
*বন্ধুদের শেয়ার করে এই বিষয়টি জানার সুযোগ করে দেবেন#