কংক্রিটের দেওয়াল তোলা এই শহরে একটু সবুজ বাগান প্রতিদিনের দৈনন্দিন জীবনে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করে। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর কবিতায় বলেছেন
"গাছের সবুজ টুকু শরীরে দরকার,আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার", "চোখ তো সবুজ চায়! দেহ চায় সবুজ বাগান"।
সবুজ বাগান স্ট্রেস মুক্ত রাখতেও সাহায্য করে। কিন্ত বহুতল ভবনে জায়গার অভাবে নিরাশ হবেন না এবং আপনি যদি বাগানপ্রেমী হন আপনি ও আপনার বাড়ির ছাদে অথবা বারান্দায় আজই বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনার শখের বাগান। রইল বাগান সম্পর্কিত কিছু জরুরি তথ্য।
১) বাগান করার উপযুক্ত জায়গা:
সূর্যের আলো যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ পৌঁছায় সেখানেই বাগান করতে হবে কারণ গাছের জন্য এটি অবশ্যই প্রয়োজন। দিনে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা সূর্যের আলো দরকার।
২) টব: আপনি মাটির কিংবা প্লাস্টিকের টবে, প্লাস্টিকের বোতল পুনব্যবহার করে গাছ লাগাতে পারেন। টবে নুরি, পাথরের ব্যবহার অক্সিজেন ও জল ভালোভাবে চলাচল করতে সাহায্য করে।
৩) মাটি: গাছ বড় হওয়ার জন্য ভালো মাটির প্রয়োজন। জল শোষণের ক্ষমতা ভালো এমন মাটি দরকার। মাটিতে নাইট্রোজেন, পটাসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ মাটি গাছের বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে।
৪)জল: বাগান করতে পর্যাপ্ত জলের প্রয়োজন।গাছ অনুযায়ী জলের ব্যবহার করুন। সকাল- বিকাল জল দিতে হবে গাছে।
৫)কি গাছ বসাবেন: মাটি, জল, পরিবেশ অনুযায়ী আপনাকে গাছ বসাতে হবে। ইন্ডোর প্ল্যান্ট যেমন peace lily, lucky bamboo, snake plant, jade plant, spider plant, ইত্যাদি - এই গাছগুলিতে বেশি সূর্যের আলোর দরকার পরে না। বিভিন্ন রকম ফুলগাছ যেমন জবা, গোলাপ, জুই, রজনীগন্ধা, আডেনিয়াম, পোর্তুলিকা, অলকানন্দা ইত্যাদি,
এছাড়াও আলোভেরা, পুদিনা, তুলসি এর মতো দরকারি গাছ ও লাগাতে পারেন।
৬)গাছের খাবার : প্রাণীদের মতোই উদ্ভিদের ও খাবারের প্রয়োজন। এর জন্য আপনি গাছ অনুযায়ী খাবার নিকটবর্তী সারের দোকানে পেয়ে যাবেন।
৭) কম্পোস্ট: অর্গানিক, ইনঅর্গানিক কম্পোস্ট ব্যবহার করুন। ডিমের খোলা, টি ব্যাগ, কফি, সব্জির খোসা, মাটিতে দিলে তাড়াতাড়ি গাছ বেড়ে উঠবে। মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখবে, কীট এবং রোগের সাথে লড়াই করবে এবং ভাল ব্যাকটেরিয়ার বিকাশে সাহায্য করবে কম্পোস্ট।
মানুষের সঙ্গে গাছের সম্পর্ক চিরাচরিত কাল থেকেই। ছোট্ট বাগান যেমন আমাদের আনন্দ দেয় তেমনই পরিবেশে ভারসাম্য বজায় রাখতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।